Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

মাসকলাইয়ের নতুন জাত বিনামাস-২ এর চাষাবাদ প্রযুক্তি

মাসকলাইয়ের নতুন জাত বিনামাস-২ এর চাষাবাদ প্রযুক্তি
ড. এম. মনজুরুল আলম মন্ডল

ডাল বাংলাদেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর খাদ্য তালিকায় উদ্ভিদ উৎস থেকে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ আমিষ সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদান। বর্তমানে বাংলাদেশে ৮.২ লক্ষ হেক্টর জমিতে ১০.৬৫ লক্ষ টন ডাল উৎপাদিত হয়, যা চাহিদার  এক-চতুর্থাংশ। অপরদিকে ৪৬,৭০০ হেক্টর জমিতে মাসকলাইয়ের উৎপাদন মাত্র ৫৩,৭০০ টন মাত্র। উপরন্তু প্রতি বছর দেশে ডাল উৎপাদন বৃদ্ধির পরিমাণ খুবই কম কিন্তু বাড়ছে ডালের চাহিদা। চাহিদার তুলনায় মাসকলাই এর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এর প্রধান কারণ হলো মাসকলাই আমন ধানের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়। তবে আশার কথা হচ্ছে বিগত কয়েক বছরে মাসকলাইয়ের আবাদ ধীরে ধীরে বাড়ছে। বর্তমান  প্রচলিত জাতগুলোর ফলন খুবই কম।  মাসকলাইয়ের ফলন যেন বৃদ্ধি পায় সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীগণ গবেষণার মাধ্যমে একটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন যা স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন এবং ফলনও ভাল। নতুন জাতটি জাতীয় বীজবোর্ড কর্তৃক ২০২১ সালে খরিফ-২ মৌসুমে চাষের জন্য বিনামাস-২ নামে নিবন্ধন লাভ করে। জাতটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জাতটির উদ্ভাবক ড. স্নিগ্ধা রায়, সিএসও বলেন যে,  স্থানীয় জাতের মতো লতানো হয় না। এ জাতটির গাছ খাড়া ও ছোট, জীবনকাল কম (বীজ বপন থেকে পরিপক্ব পর্যন্ত সময় লাগে ৭৫-৭৮ দিন), বীজের আকার স্থানীয় জাতের চেয়ে বড় ও বীজত্বক চকচকে কাল। বিনা মাস-২ বীজে আমিষের পরিমাণ ২২-২৪%। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ১.৫ টন এবং পাতা হলুদ মোজাইক ভাইরাস সহ্য ক্ষমতাসম্পন্ন।
চাষাবাদ পদ্ধতি
বৃষ্টির পানি জমে থাকে না এরূপ যে কোন জমিতেই মাসকলাই এর চাষ করা যায়। তবে বেলে দো-আঁশ ও পলি দো-আশ মাটি, মাঝারি উঁচু এবং সুনিষ্কাশিত জমি মাসকলাই আবাদের জন্য উপযোগী। জমির অবস্থাভেদে ২-৪টি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। মাসকলাই চাষের জন্য ২টি চাষই যথেষ্ট তবে পতিত জমির জন্য ৩-৪টি চাষ লাগে।
বীজ শোধন ও বীজ বপন : বীজবাহিত রোগ দমনের জন্য বীজ শোধন করে বপন করা দরকার। প্রতি কেজি বীজের জন্য       ২ গ্রাম ব্যাভিস্টিন বা অন্য কোন উপযোগী বীজ শোধক ছত্রাকনাশক পরিমাণমতো প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২ ঘণ্টা রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে বীজ শোধন করা যায়। ছিটিয়ে এবং সারি করে বীজ বপন করা যায়। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব ১২ ইঞ্চি রাখতে হবে। প্রতি একরে ১৪-১৬ কেজি বীজ দরকার হয়। ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে বীজের পরিমাণ কিছুটা বেশি দিতে হয়। বপনের সময় অঞ্চলভেদে কিছুটা তারতম্য হয়।    খরিফ-২ মৌসুমে ১ ভাদ্র থেকে ১৫ই ভাদ্র (আগস্টের       ১৫-৩১) পর্যন্ত বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। তবে মধ্য সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বপন করা যায়। আগস্টের পরে বীজ বপন করলে ফলন হ্রাস পায়।
সার প্রয়োগ : জমির উর্বরতার ওপর নির্ভর করে সারের তারতম্য করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় সার সুপারিশমালা অনুসরণ করতে হবে। তবে সাধারণভাবে অনুর্বর জমিতে একরে ১৬-২০ কেজি ইউরিয়া, ৩৪-৩৮ কেজি টিএসপি,    ১২-১৬ কেজি এমওপি ও ৫ কেজি জিপসাম সার শেষ চাষের সময় সমুদয় সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। অপ্রচলিত এলাকায় আবাদের জন্য জীবাণুসার প্রয়োগ করা যেতে পারে। প্রতি কেজি বীজের জন্য ৫০-৮০ গ্রাম হারে অণুজীব প্রয়োগ করা যেতে পারে। জীবাণুসার ব্যবহার করলে ইউরিয়া সার প্রয়োগের প্রয়োজন নাই।
জীবাণুসার প্রয়োগ ও ব্যবহার পদ্ধতি : এক কেজি ভিজা মাসকলাই বীজের মধ্যে ৫০-৮০ গ্রাম জীবাণুসার ছিটিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করতে হবে যাতে বীজের গায়ে সমভাবে মিশে যায়। জীবাণুসার মেশানোর পর বীজ বেশি সময় রোদে ফেলে রাখলে গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। কাজেই তাড়াতাড়ি বীজ বপন করতে হবে।
অন্যান্য পরিচর্যা : চারা গজানোর পরে জমিতে আগাছা দেখা দিলে ১৫-২০ দিন পর নিড়ানি দিয়ে হালকাভাবে আগাছাগুলো পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। এতে ভাল ফলন পাওয়া যায়।  বিনামাসকলাই-২ এ পোকার আক্রমণ তুলনামূলক কম। বিছাপোকা ও পাতা মোড়ানো পোকা এবং ফল ছিদ্রকারী পোকা মাসকলাই মারাত্মক ক্ষতি করে। বিছাপোকা ও পাতা মোড়ানো পোকা ডিম থেকে ফোটার পর ছোট অবস্থায় পোকাগুলো একস্থানে দলবদ্ধভাবে থাকে এবং পরবর্তীতে আক্রান্ত গাছের পাতা খেয়ে জালের মতো ঝাঁঝরা করে ফেলে। এ পোকা দমনের জন্য আক্রান্ত পাতা দেখে পোকাসহ পাতা তুলে পোকা মেরে ফেলতে হবে। প্রতি বিঘায় ৮-১২টি গাছের ডাল বা কঞ্চি পুঁতে দিলে পোকাভোজী পাখি কীড়া খেয়ে দমন করতে পারে।  আক্রমণ খুব বেশি হলে অনুমোদিত কীটনাশক এ্যাডমায়ার ২০০এসএল@ ০.৫০ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে ৩ বার ১০ দিন অন্তর অন্তর স্প্রে করে অথবা রিপকর্ড ১০ইসি বা পারফেকথিয়ন ৪০ইসি ২০মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত ক্ষেতে ১০ দিন অন্তর অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করেও পোকা দমন করা যায়।
রোগ দমন : বিনামাসকলাই-২ পাতার সার্কোস্পোরা দাগ রোগ ও পাউডারি মিলডিউ রোগ প্রতিরোধ  ক্ষমতাসম্পন্ন এবং হলুদ মোজাইক ভাইরাস রোগ সহ্য ক্ষমতাসম্পন্ন। মোজাইক ভাইরাস রোগ দেখা দেয়া মাত্র গাছ উপড়ে ফেলতে হবে। সাধারণত কোন ছত্রাকনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না তবে ছত্রাকের (সার্কোস্পোরা দাগ রোগ) মারাত্মক আক্রমণ হলে যে কোন ছত্রাকনাশক (ডাইথেন এম ৪৫, বেভিস্টিন ৫০) ৭-১০ দিন পর পর দুবার প্রয়োগ করা যেতে পারে। পাউডারি মিলডিউ রোগ দমনের জন্য টিল্ট-২৫০ বা থিওভিট (০.২%) ১০ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করতে হবে।      
ফসল সংগ্রহ, মাড়াই ও সংরক্ষণ : খরিফ-২ মৌসুমে মধ্য কার্তিক (অক্টোবর মাসের শেষে) ফসল সংগ্রহ করতে হয়। ফসল পরিপক্ব হলে শুঁটি কাল হয়ে আসে। এ সময় মাসকলাই এর গাছ মাটির উপর হতে কেটে অথবা উপড়ে সংগ্রহ করতে হবে। ৩-৪ দিন রোদে শুকিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে দানাগুলো আলাদা করতে হবে। মাড়াই করা বীজ রোদে ভালো করে শুকিয়ে ঠাণ্ডা করে গুদামজাত করতে হবে। বীজ সংরক্ষণ করতে হলে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। যথা: ১) বীজ এমনভাবে শুকাতে হবে যাতে বীজের আর্দ্রতা ১২% এর বেশি না থাকে। ২) পলিথিনের ব্যাগ, টিনের ড্রাম, আলকাতরা মাখা মাটির মটকা বা কলসীতে বীজ সংরক্ষণ করে মুখ ভালোভাবে আটকিয়ে রাখতে হবে যেন কোনভাবেই ভেতরে বাতাস ঢুকতে না পারে। বীজ শুকানোর পর গরম অবস্থায় সংরক্ষণ না করে ঠাণ্ডা হলে সংরক্ষণ করতে হবে। ৩) বীজের পাত্র অবশ্যই ঠাণ্ডা অথচ শুষ্ক জায়গায় রাখতে হবে। সরাসরি মেঝেতে না রেখে মাচা বা কাঠের তক্তার উপর রাখলে ভালো হয়। ৪) মাঝে মধ্যে বীজের আর্দ্রতার দিকে নজর রাখতে হবে। বীজের আর্দ্রতা বেড়ে গেলে প্রয়োজনমতো রোদে শুকিয়ে পূর্বের মতো একই নিয়মে পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। য়


চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ময়মনসিংহ। মোবাইল : ০১৭১৬৭৪৯৪২৯
ই-মেইল :  mmamondal@gmail.com

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি

মাসিক ‘কৃষিকথা’য় লেখা আহ্বান

সম্মানিত লেখক/পাঠকগণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, কৃষিকথা পত্রিকাটি কৃষি তথ্য সার্ভিসের একটি ঐতিহ্যবাহী মাসিক কৃষি বিষয়ক ম্যাগাজিন। পত্রিকাটি দীর্ঘদিন ধরে এ প্রতিষ্ঠানের গর্বিত অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কৃষি তথ্য সার্ভিস কর্তৃক প্রকাশিত মাসিক কৃষিকথা পত্রিকাটি বাংলা মাস অনুযায়ী প্রতি মাসে প্রকাশিত হয়ে থাকে। এতে বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণবিদ, কৃষি অর্থনীতিবিদ, শিক্ষক, মাঠকর্মী, কৃষকসহ সংশ্লিষ্ট কৃষিজীবীরা বিভিন্ন বিষয়ে লিখে থাকেন। আপনি/আপনার প্রতিষ্ঠানের উপযুক্ত নতুন তথ্য ও প্রযুক্তি কৃষিকথায় প্রকাশের মাধ্যমে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। উল্লেখ্য, বর্তমানে লেখদের সম্মানীভাতা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষিকথায় প্রকাশিত প্রতিটি কনটেন্টের জন্য অনুমোদিত হারে লেখক সম্মানী প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে।
তাই আপনি/ আপনার প্রতিষ্ঠানের কৃষি বিষয়ক সময়োপযোগী ও উপযুক্ত কনটেন্ট যেমন- প্রবন্ধ/নিবন্ধ/কৃষিতে নারী উদ্যোক্তা/সফলতা/নাটিকা/ছড়া ইত্যাদি এবং মানসম্মত ছবি সম্বলিত লেখা SutonnyMj ফন্টে প্রমিত বাংলায় প্রায় ১২০০ থেকে ১৫০০ শব্দের মধ্যে editor@ais.gov.bd অথবা ass.editorais21@gmail.com ই-মেইল ঠিকানায় প্রেরণ করবেন। উল্লেখ্য উক্ত লেখা যে মাসে ছাপানোর উপযোগী তার কমপক্ষে দুই মাস আগে প্রেরণ নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
অথবা
ডাকযোগে প্রেরণ : পরিচালক অথবা সম্পাদক, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫ এ ঠিকানায় প্রেরণ করতে হবে। সম্মানিত লেখকের নাম, পদবি, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর/নগদ অ্যাকাউন্ট নম্বর, ই-মেইল আবশ্যক।    
    -সম্পাদক


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon